মাদারীপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৪৫ জন। এমন সুযোগ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা সদ্য চাকরি পাওয়া পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। ঘুস ছাড়া সন্তানদের চাকরি হওয়ায় খুশি অভিভাবকরাও।সোমবার রাত ১০টার দিকে জেলার পুলিশ লাইনস মাঠে তাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন জেলার পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। কোনো দালাল কিংবা প্রতারক নয়, শতভাগ যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এ নিয়োগ প্রক্রিয়াসম্পন্ন হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।

জানা যায়, কারও বাবা কৃষক, কারও বাবা ভ্যানচালক, আবার কারও বাবা দিনমজুর। মাদারীপুর পুলিশ লাইনস মাঠে ফলের জন্য জড়ো হয় এমন চাকরিপ্রত্যাশী সন্তানরা। সব অপেক্ষার পালা শেষ হয় চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি এক হাজার ১৭৬ প্রত্যাশী পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য মাঠে আসেন। যার মধ্যে এক হাজার ৯৬ পুরুষ, আর ৮০ নারী প্রার্থী ছিলেন। পরে বিভিন্ন ধাপে শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়েন অনেকেই। তাদের মধ্যে সবশেষ সোমবার রাত ১০টার দিকে ৩৮ পুরুষ ও ৭ নারী সদস্যদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন জেলার পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। চাকরিতে নতুন যোগদানকৃত পুলিশ সদস্যরা দেশ ও জাতির জন্য অবিরাম কাজ করে যাবেন বলে প্রত্যাশা তাদের।

নতুন চাকরি পাওয়া মাদারীপুরের কালকিনির পশ্চিম আলীপুরের নাজমিন আক্তার বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। চেষ্টার মাধ্যমে পুলিশে চাকরি হয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার পাশাপাশি জনগণের সেবায় নিজেকে সর্বত্রই নিয়োজিত রাখব। আরেক চাকরি পাওয়া মাদারীপুর সদরের মস্তফাপুরের সোহরাব খন্দকারের মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকে অনেক স্বপ্ন ছিল পুলিশ হব। চেষ্টা করে তা বাস্তবে রূপ নিল। খুব ভালো লাগছে।

মাদারীপুরের রাজৈরের হোসেনপুরের সত্যবর্তীর সাজ্জাদ হোসেন শাওন বলেন, মাত্র ১২০ টাকা খরচ হয়েছে এই চাকরি পেতে। যারা সহযোগিতা করছে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। মাদারীপুরের রাজৈরের কদমবাড়ি এলাকার সদ্য চাকরি পাওয়া অপর্ণা ভক্তের বাবা স্বপন ভক্ত বলেন, শিক্ষাগত্য যোগ্যতা ও শারীরিক যোগ্যতায় আমার মেয়ের চাকরি হয়েছে। খুব ভালো লাগছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায়। আমার মেয়ে দেশের জন্য কাজ করবে— এটিই প্রত্যাশা।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, জেলার পুলিশ সুপারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যদের নিয়োগ কমিটি গঠন করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারস। এ কমিটি স্বচ্ছতার ও শতভাগ যোগ্যতার মাধ্যমে ৪৫ প্রার্থীকে চূড়ান্ত করে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়ও স্থান পেয়েছে। আগামীতে পুলিশে চাকরি এমন প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

প্রসঙ্গত, পুলিশে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে ঘুসগ্রহণকালে গত ১১ ফেব্রুয়ারি শহরের পুরাতন কোর্ট এলাকা থেকে ইউনুস আলী বেপারি ও রিপন হাওলাদার নামে দুজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।